ছাত্রজীবনে আয়ের সহজ কয়েকটি উপায়
ছাত্রজীবনে নিজের আয় থাকলে অনেকাংশে তা কাজে আসতে পারে। আর্থিকভাবে সাবলম্বী হতে কে না চায়? তাই ছাত্রজীবন থেকেই পড়াশোনার ক্ষতি না করে আয়ের উদ্দেশ্যে কিছু না কিছু করা উচিত।
ছাত্রজীবনে আয় করার কার্যকরী কিছু উপায়
ছাত্রজীবনে আয় করার উপকারিতা :
ছাত্রজীবনে চারপাশকে জানার অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়, যে সুযোগ পরবর্তীতে আর পাওয়া যায় না। এই সময়ে মানুষের মাঝে নতুন কিছু শেখার আগ্রহ সবথেকে বেশী থাকে, তাই তখনই নতুন জায়গায় ভ্রমণ, সমাজসেবা, নতুন আবিষ্কার এবং নতুন কিছু শেখাতে সময় ও অর্থ ব্যয় করা উচিত।
তাই বলে অর্থের জন্য পরিবারের উপর নির্ভরশীল হওয়া মোটেই কাম্য নয়। তাছাড়া এত খরচ চালানোর সামর্থ পরিবারের নাও থাকতে পারে। তাই এ সময়ে নিজেদেরকেই চেষ্টা করতে হবে আয়ের উৎস তৈরি করে নিতে।
তাহলে এবার জেনে নেয়া যাক, কিভাবে ছাত্রজীবনে আয়ের উৎস তৈরি করা যায় তার কিছু উপায়ঃ
➤অনলাইন বা অফলাইন টিচিং
আপনি যদি কোনো বিষয়ের উপর খুব ভালোভাবে দক্ষতা রাখেন, তাহলে উক্ত বিষয়টি অন্যদের শিখিয়ে আয় করতে পারেন। এই শেখানোর বিষয় বিভিন্ন রকমের হতে পারে অনলাইনে কিংবা অফলাইনে পড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন দক্ষতানির্ভর কোর্স তৈরী করে তা বিক্রি করেও আয় করা যায়।
➤স্টক ফটোগ্রাফি
ফটোগ্রাফিতে আপনি যদি দক্ষ হন, তবে Shutterstock, Adobe stock, এছাড়াও বিভিন্ন স্টক ফটোগ্রাফি ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করে বেশ ভালো মানের আয় করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে আপনি একবার ছবির জন্য কাজ করবেন ও এর থেকে ইনকাম পাবেন। অর্থাৎ আয়ের জন্য আপনাকে সার্বক্ষণিক কাজ করতে হচ্ছেনা।
আরো পডুনঃ ডিপ্রেশন কি এবং এর থেকে মুক্তির উপায়
➤গ্রাফিক ডিজাইন
গ্রাফিক ডিজাইন বর্তমানে আকাশচুম্বী জনপ্রিয় সেবা ও এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে পুরো বিশ্বে। ছাত্র হিসেবে যে কোনো প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম ডিজাইনার হিসেবে কাজ নিতে পারেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করেও আয় করতে পারেন।
➤ইউটিউব
ফ্রি রিসোর্সের কথা বললে যা সবার আগে মাথায় আসে তা হলো ইউটিউব। যে কেউই ইউটিউবে চ্যানেল করে ভিডিও আপলোড করে আয় শুরু করে দিতে পারেন। তবে ইউটিউব চ্যানেল খুলেই তা থেকে আয় শুরু হবে এমনটা নয়।
ইউটিউবে প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোড করতে থাকলে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর পাশাপাশি আরো বিভিন্ন ভাবে ইউটিউব থেকে আয় সম্ভব।
➤ওয়েবসাইট তৈরী
ওয়েবসাইট তৈরী করে আয় করার একাধিক মাধ্যম রয়েছে। যেমন, ব্লগ ওয়েবসাইটে তৈরী করে উক্ত ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করা সম্ভব। আবার স্পন্সরড পোস্ট থেকেও আয় করা যায়। তবে ওয়েবসাইট থেকে আয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন ধৈর্য ধরে কাজ করতে হয়। এজন্য আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে, তাহলে এই সময়ে ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করতে পারেন। আয়ও হবে।
➤ডেলিভারি ড্রাইভিং
আজকের দিনে উবার, পাঠাও এর মত রাইদ শেয়ারিং সেবা অনেক জনপ্রিয়। আপনার যদি একটি বাইক বা সাইকেল অথবা ব্যক্তিগত গাড়ি থাকে, তবে তা ব্যবহার করে ছাত্রাবস্থায় ভালো অংকের আয় করতে পারেন। অথবা চাইলে ফুড ডেলিভারি কিংবা সরাসরি ড্রাইভিং এর কাজ করতে পারেন বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো আপনি যে সময় কাজ করতে চান, উক্ত সময়ে কাজের স্বাধীনতা রয়েছে।
➤অনলাইন স্টোর
সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোর কল্যাণে খুব সহজে একটি অনলাইম স্টোর সেটাপ করা যায়। এই জিনিসগুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজের ছোট একটি ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলা যায়। এতে দৈহিক উপস্থিত থেকে স্টোর পরিচালনার ঝামেলা থাকছে না। শুধুমাত্র প্রোডাক্টের অর্ডার আসলে তা কাস্টমারের কাছে পৌছে দেওয়াই হচ্ছে অনলাইন ব্যবসার কাজ। তাই ছাত্রজীবনে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা বেশ লাভজনক হতে পারে।
➤ফাইভারে গিগ খোলা
ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে বেশ চাহিদা সম্পন্ন কাজ। ফাইভারে গিগ খুলে ফ্রিল্যান্সিং করে ছাত্রাবস্থায় আয় করা যায়। আপনার যেকোনো দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ফাইভারে গিগ খুলে তা থেকে আয় করতে পারবেন।
➤নোটস বিক্রি করা
আপনার সৃজনশীলধর্মী নোটস বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীদের সাথে শেয়ার করেও আয় করতে পারেন। কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে দাম সহ নোট আপলোড করা যায় এবং অন্যরা উক্ত নোট ডাউনলোড করলে তা থেকে অর্থ পাওয়া যায়। Nexus Notes ও Stuvia এর মতো সাইটগুলোতে যে কেউ বিনামূল্যে নোটস আপলোড করতে পারে। নোট থেকে প্রাপ্ত লাভের অংশ আপনার সাথে শেয়ার করবে এসব ওয়েবসাইট।
➤রেস্টুরেন্ট
দেশের অনেক রেস্টুরেন্টে পার্ট টাইম বা ফুল টাইম চাকরির সুযোগ আছে যা একজন ছাত্রের জন্য আয়ের আদর্শ একটি উপায় হতে পারে।
➤শপিং সেন্টারে কাজ করা
ছাত্রজীবনে আয়ের একটি সেরা উৎস হলো শপিং সেন্টারে পার্ট টাইম কাজ করা। দোকানে পার্ট টাইম কাজ করে আয়ের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন অভিজ্ঞতাও অর্জন সম্ভব।
পরিশেষে...
সবসময় পরিবারের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজের একটি আয়ের উৎস তৈরি করে নিতে পারলে খুবই উপকার হবে। হোক সেটা অল্প কিংবা ছোট কোন উৎস। কিন্তু এই ছোট্ট উৎসটিই একটা সময়ে বৃহৎ পরিসরে রূপান্তর হয়।
