পদার্থবিজ্ঞান (নবম-দশম)
৪র্থ অধ্যায়ঃ কাজ, শক্তি ও ক্ষমতা
পদার্থবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হলো কাজ, শক্তি ও ক্ষমতা। এই অধ্যায়টি অন্যান্য অধ্যায়গুলোর সাথেও সম্পর্কিত যেমন বল, গতি, ইত্যাদি। গত পোষ্টে আমি গতি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম ও শর্টনোটের পিডিএফ দিয়েছিলাম।
আজকের পোষ্টে থাকবে কাজ, শক্তি ও ক্ষমতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও শর্টনোটের পিডিএফ। শর্টনোট পড়ার আগে এই পোষ্টে বিস্তারিত পড়ে নিলে ইনশাআল্লাহ বেসিক নিয়ে কোন সমস্যা থাকবে না।
পদার্থবিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায়ের নোট ও পিডিএফ
কাজ, শক্তি ও ক্ষমতা অধ্যায়ের বিস্তারিত নিচে দেয়া হলো-
কাজ কি?
কাজঃ "কাজ হলো বল প্রয়োগের দ্বারা বস্তুর সরন ঘটানো।"
অর্থাৎ বল প্রয়োগ করলে যদি বস্তুর সরন ঘটে তবে তাকে কাজ বলা হবে।
যেমন তুমি সারাদিন চেষ্টার পরও একটি দেয়ালকে ধাক্কা দিয়ে এক চুলও সরাতে পারোনি। এখানে কি তোমার কাজ হয়েছে? অবশ্যই না। কারন, কাজ ঘটাতে হলে তোমাকে দেয়ালের সরন ঘটাতে হবে। তুমি বল প্রয়োগ করেছো ঠিকই, কিন্তু দেয়ালকে সরাতে পারো নি। তার মানে তুমি কোন কাজই করোনি। তোমার পরিশ্রম বৃথা!
সুতরাং বলা যেতে পারে,
কাজ হলো বস্তুর উপর প্রয়োগকৃত বল ও বস্তুর সরনের গুণফল।
কাজের সমীকরণঃ
ধরি, বস্তুর উপর প্রয়োগকৃত বল F, বল প্রয়োগের ফলে বস্তু যদি s দূরে সরে যায়, তবে সংজ্ঞানুসারে কাজ W হবে,
W = Fs
এটিই কাজের সমীকরণ।
কাজের এককঃ
কাজের মাত্রাঃ
কাজের প্রকারভেদ
কাজ প্রধানত দুই প্রকার।
- ধনাত্মক কাজ (W = Fs): এটি দ্বারা ১ম বস্তু কর্তৃক ২য় বস্তুর উপর কাজ বোঝায়।
অর্থাৎ, বল প্রয়োগের দিকে বস্তুর সরন ঘটা হলো ধনাত্মক কাজ।
যেমন, একজন লোক ৫০ কেজি ভরের একটি বস্তা মাথায় নিলো। এতে ১ম বস্তু (ব্যক্তিটি) দ্বারা ২য় বস্তুর (বস্তা) উপর কাজ করা হয়েছে।
- ঋণাত্মক কাজ (W = -Fs): এটি দ্বারা ২য় বস্তু কর্তৃক ১ম বস্তুর উপর (উল্টো) কাজ বোঝায়।
অর্থাৎ, বল প্রয়োগের বিপরীত দিকে বস্তুর সরন ঘটা হলো ঋণাত্মক কাজ।
আগের উদাহরণে, ব্যক্তিটি যদি বস্তা উঠাতে না পারে কিংবা বস্তা যদি পড়ে যায় তবে এখানে ঋণাত্মক কাজ হবে।
শক্তির ধারণা
শক্তিঃ মূলত কোন বস্তুর উৎসের কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলা হয়।
এককথায়, কোন সিস্টেমের কাজ করার সামর্থ্য থাকলেই তাকে ঐ সিস্টেমের শক্তি বলা হবে।
কাজ করতে হলে ঐ সিস্টেম কর্তৃক অপর কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে বস্তুর সরন ঘটাতে হবে। যদি পুরো জিনিস করার সামর্থ্য ঐ সিস্টেমের থাকে তবেই বলা হবে ঐ সিস্টেমের শক্তি আছে।
শক্তির একক ও মাত্রাঃ
শক্তি যেহেতু কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত তাই শক্তির আলাদা কোন একক বা মাত্রা নেই।
কাজের একক ও মাত্রাই হলো শক্তির একক ও মাত্রা।
শক্তি প্রকারভেদ?
শক্তি প্রধানত দুই প্রকার।
- গতিশক্তিঃ "কোন বস্তুর গতির কারনে যে শক্তির সৃষ্টি হয় তাকে ঐ বস্তুর গতিশক্তি বলা হয়।"
কোন বস্তুতে বল প্রয়োগ করা হলে তার সরন ঘটে। সরন ঘটলেই গতির সৃষ্টি হয় আর সেখানেই গতিশক্তির উদ্ভব ঘটে।
একে Ek দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
Ek = Kinetic Energy
গতিশক্তির সমীকরণঃ
![]() |
| গতিশক্তির রাশিমালা, একক ও মাত্রা |
- স্থিতিশক্তি বা বিভবশক্তিঃ "বস্তুর অবস্থা বা অবস্থানের জন্য বস্তুর মধ্যে যে শক্তি সঞ্চিত থাকে তাকে বস্তুর স্থিতিশক্তি বা বিভবশক্তি বলে।"
এই বিভবশক্তি সবসময় স্থির অবস্থায় বস্তুর অবস্থানের (উচ্চতা) সাপেক্ষে নির্ণয় করা হয়।
বিভবশক্তির সমীকরণঃ
ধরি, একটি বস্তুকে F বল প্রয়োগে h উচ্চতায় উঠানো হলো। বস্তুর উপর কার্যকরী অভিকর্ষীয় ত্বরন g হলে বস্তুর উপর কাজ হবে,
W = mgh
এটিই স্থিতি বা বিভবশক্তির সমীকরণ। একে Ep দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
Ep = Potential Energy_3-1.jpg)
বিভবশক্তির রাশিমালা, একক ও মাত্রা
শক্তির উৎসঃ
শক্তির উৎস সমূহকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
- নবায়নযোগ্য শক্তিঃ যে সকল শক্তি নতুন করে ব্যবহার করা যায়। এসব শক্তির শেষ নেই।
যেমনঃ পানি, আলো, বাতাস ইত্যাদি। - অনবায়নযোগ্য শক্তিঃ যেসব শক্তিকে পুনরায় ব্যবহার করা যায় না। এসব শক্তির শেষ রয়েছে।
যেমনঃ তেল, গ্যাস, কয়লা, জ্বালানী, ইউরেনিয়াম ইত্যাদি।
শক্তির নিত্যতা বা সংরক্ষণশীলতা
যেমন, একটি স্থির গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে গতিশীল করার সময় প্রথমে ধাক্কা দিতে যে শক্তি প্রয়োজন হয়েছে যেটি পরবর্তীতে গাড়ির গতিশক্তিতে পরিণত হয়েছে।
শক্তির নিত্যতা সূত্র
শক্তি অবিনশ্বর। এর সৃষ্টি বা বিনাশ নেই। মহাবিশ্বে মোট শক্তি ধ্রুব।
শক্তির রূপান্তর
যান্ত্রিকশক্তি গতিশক্তিতে, আলোকশক্তি তাপশক্তিতে ইত্যাদি। কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলোঃ
- চৌম্বকশক্তি
- বিদ্যুৎশক্তি
- রাসায়নিক শক্তি
- পারমানবিক শক্তি ইত্যাদি।
ক্ষমতা
কোন উৎস বা সিস্টেম একক সময়ে যে কাজ সম্পাদন করে তাকে ক্ষমতা বলা হয়।
ক্ষমতার রাশিমালা, একক ও মাত্রা
![]() |
| ক্ষমতার রাশিমালা, একক ও মাত্রা |
ক্ষমতার একক হিসেবে KW (কিলোওয়াট), MW (মেগাওয়াট) ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
কর্মদক্ষতা
কোন যন্ত্র দ্বারা কাজে রূপান্তরিত শক্তি এবং ঐ যন্ত্রে মোট প্রদত্ত শক্তির অনুপাতই হলো যন্ত্রের কর্মদক্ষতা।
![]() |
| কর্মদক্ষতার রাশিমালা, একক ও মাত্রা |
কোন ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা কখনো 100% হয় না।
ভরশক্তি সম্পর্ক
[আলোর বেগ C = 3 x 106 ms-1]
পিডিএফ ডাউনলোড
SSC Physics Ch 4
Size: 1.3MB
জ্ঞানকে কখনো নিজের মাঝে আবদ্ধ করে রাখতে নেই।
এসএসসি'২২ শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি (10 Minute School)
শেষ মুহূর্তে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে হিমশিম খাওয়া? আর নয় চিন্তা! টেন মিনিট স্কুল নিয়ে এলো এসএসসি’২২ পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি কোর্স!
কোর্সে থাকছেঃ
- ৫ টি বিষয় ( সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন )
- ৩৫টি লাইভ ক্লাস
- ৩৫টি লেকচার শিট

_1-1.jpg)

_2-1.jpg)
_5-1.jpg)

_5-2.jpg)
